Tenet (2020) Movie Review ‍and Explanation in Bangla
Tenet (2020)
Film: Tenet(2020)
Delivery date: September 03, 2020
Chiefs: Christopher Nolan
Journalists: Christopher Nolan
Stars: John David Washington, Robert Pattinson, Elizabeth Debicki
IMDB 7.3/10
Run Time: 2h 30m
Kind: Activity, Science fiction, Thrill ride

ক্রিস্টোফার নোলান এমন একখানা নাম, কোনো মুভির সঙ্গে যার নাম যুক্ত দেখলেই আমি নিশ্চিত যে ঐ মুভির গল্প আমায় মুগ্ধ করবেই। আমার প্রত্যাশা এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়নি। তিনি সর্বমোট মুভি বানিয়েছেন এগারটা। টেনেট উনার এগার নাম্বার মুভি। এবং আমার ধারণা, টেনেট এই দশকের সবচেয়ে ভুল বোঝা মুভি। নোলানের স্বভাবজাত প্যাঁচগোছের সীমা এই সিনেমা অতিক্রম করেছে তুমুল। অরিজিনাল, হিন্দি ডাব সবশেষে বাংলা সাবটাইটেল দিয়েও দেখতে হয়েছে আমার। একাধিক বারবার। কিছু থাকে না অমন, বুঝতে পারি না, অথচ দেখতে সৌন্দর্য। এবং  অনুভুতিটা থাকে মারাত্মক। টেনেট মুভিটি আমার কাছে এমন একখানা সৌন্দর্য। তা বুঝার আগে। বুঝার পর মনে হয়, এই সিনেমা ভুল বোঝা উচিত নয়। জটিলতাই এই সিনেমার আসল সৌন্দর্য। টেনেট বিশ্লেষণ করতে যাচ্ছি। তবে ফিজিক্স বা বিজ্ঞানের জটিল জটিল প্রবন্ধ দিয়ে নয়, আমার মতো করে, মানে যতটা সহজে উপস্থাপন করা যায়।
টাইম ট্রাভেল বলতে আমরা বুঝি, একটা যন্ত্রের ভেতর দিয়ে অতীত অথবা ভবিষ্যতে চলে যাওয়া। টেনেটের টাইম ট্রাভেল একটু আলাদা। যে যন্ত্র দিয়ে এখানে টাইম ট্রাভেল করা হয়, ওটার নাম টার্নস্টাইল। এই টার্নস্টাইল ব্যবহার করে কিন্তু ভবিষ্যতে যাওয়া যাবে না। এই যন্ত্রের দু'টো দরজা থাকে। লাল এবং নীল। আমাদের বর্তমান সময় যেদিকে চলছে, স্বাভাবিক, ওটা হচ্ছে এই টার্নস্টাইলের লাল দরজা। এই লাল দরজা দিয়ে ঢুকলে টার্নস্টাইলটা ঘুরে নীল দরজায় পৌঁছে দেবে আপনাকে। নীল দরজা হচ্ছে লাল দরজার উল্টোদিক। ঠিক যে মুহূর্তে আপনি নীল দরজায় পা রেখেছেন, ঠিক ঐ মুহূর্ত থেকে সময় উল্টোদিকে যেতে থাকবে। উদাহারণ দিই।
আপনি দশ তারিখ দশটা পনের মিনিটে টার্নস্টাইলে ঢুকলেন। লাল দরজা দিয়ে। নীল দরজায় আসার পর ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখবেন, ঘড়ি উল্টোদিকে চলছে। পাঁচ মিনিট আপনি নীল দরজায় থাকলে আপনি পৌঁছে যাবেন দশটা দশ মিনিটে। আর দশ মিনিট থাকলে পৌঁছে যাবেন দশটায়। শুধু ঘড়ি না, আপনি স্বাভাবিক চললেও আপনার আশপাশ সহ পুরো পৃথিবী উল্টোদিকে যাবে। লক্ষ্য করুন, যা কিছু ঘটার ঘটে গেছে ইতোমধ্যে। ধরুন, স্বাভাবিক সময়ে কী হয়? একটা গাড়ি চলছে সামনের দিকে, অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে, আগুনে পুড়ছে। কিন্তু এই জায়গায় আপনি দেখবেন উল্টো। একটি গাড়ি আগুনে পুড়ছে, তারপর অ্যাক্সিডেন্ট হচ্ছে, তারপর গাড়ি অটোম্যাটিক নিজ থেকে ঠিকঠাক হয়ে উল্টোদিকে চলে যাচ্ছে। রিভার্স। এইভাবে আপনি দিনের পর দিন পার করতে পারবেন এই জায়গায়। সবকিছু উল্টো দিকে চলে যাবে। সাধারণ সময়ে দশ তারিখের পর এগার তারিখ আসলেও ঐ সময় তারিখ যাবে উল্টোদিকে। দশের পর আসবে নয়। নয়ের পর আট। এইরকম করে আপনি ধরা যাক দশ দিন পেছনে গিয়ে নিজেকে আরেকটা টার্নস্টাইলে ঢুকিয়ে ঐ সময়ের বর্তমান অর্থাৎ লাল দরজায় ঘুরিয়ে নেবেন। এই যে, টাইম ট্রাভেল হয়ে গেল। আপনি এখন আছেন এক তারিখে। ভবিষ্যতের দশ তারিখ থেকে এক তারিখে চলে আসা একজন আগন্তুক। দশ তারিখ অবধি আপনি অধিকাংশ ঘটনা ঘটে যেতে দেখেছেন। আপনি আপনার মতোন কাজ করবেন।

অন্যান্য টাইম ট্রাভেল থিউরির সঙ্গে এই সিনেমার টাইম ট্রাভেল এইজন্য আলাদা, কারণ আপনি একটি যন্ত্রে ঢুকে চট করে দশ দিনের আগের অতীত অথবা চট করে দশ দিন পরের ভবিষ্যতে চলে যেতে পারবেন না। আপনি শুধুই অতীতে যেতে পারবেন। কিন্তু প্রতিটা দিন পার করতে হবে আপনার। প্রতিটা দিন বেঁচে থাকতে হবে। প্রতিটা রিভার্স দিন অতিক্রম করেই অতীতে পৌঁছুতে হবে।
লক্ষ্য করুন, এটা শুধুমাত্র টার্নস্টাইল। অ্যালগরিদম নয়। টার্নস্টাইল যেখানে শুধুমাত্র আপনাকে অথবা নির্দিষ্ট বস্তুকে স্বাভাবিক রেখে জগতটা রিভার্স করে দেবে, অ্যালগরিদম সেখানে আরও ভয়ানক। এটা শুধুমাত্র আপনাকে অথবা নির্দিষ্ট বস্তুকে নয়, সমগ্র জগতের যে স্বাভাবিক সময় চলছে সামনের দিকে, ওটাকেই রিভার্স করে দিতে সক্ষম। অর্থাৎ, টার্নস্টাইলে ঢুকলে আপনি উল্টোদিকে হাঁটবেন না, আপনার জগত উল্টোদিকে হাঁটবে। আর অ্যালগরিদম ব্যবহার করলে আপনার জগত সহ আপনি নিজেও উল্টোদিকে যাত্রা করবেন। সামনে এগুনোর কোনো উপায় আর নেই। পৃথিবীর স্বাভাবিক সময়কে উল্টোদিকে বইয়ে দেওয়ার ভয়ানক অ্যালগরিদমটা আবিষ্কার করেছেন মূলত ভবিষ্যতের কোনো এক বিজ্ঞানী। আবিষ্কারের পর তিনি বুঝতে পারলেন এই জিনিস দিয়ে ফিজিক্স বিজ্ঞান কিংবা পৃথিবীর স্বাভাবিক নিয়মকে মধ্যাঙ্গুল দেখিয়ে পেছনের দিকে যাত্রা করা সম্ভব, এবং পৃথিবীর বাসযোগ্য অবস্থা থেকে ফের অতীত অতীত এবং অতীতে ফেরত চলে যাওয়া যাবে, যেখান থেকে মূলত পৃথিবী সৃষ্টি, তখন তিনি এই বিপজ্জনক জিনিসের ফিজিকাল একটা আকার দেন যাতে কেউ কপিও করতে না পারে কোনোদিন। সিনেমায় এটিকেই অ্যালগোরিদম বলা হয়েছে। অ্যালগোরিদমের নয়টা পার্ট করেন তিনি। অতীতে যান। মুভিতে আমরা যে সময়ে আছি, তার চেয়েও অনেক অতীতে গিয়ে নয়টা পার্ট নয়টা আলাদা আলাদা জায়গায় পুঁতে আত্মহত্যা করেন।
ব্যাস। উনার গল্প শেষ। এইবার গল্প শুরু একজন রাশিয়ান মাফিয়ার। নাম, আন্দ্রে স্যাটোর। আমরা পৃথিবীর যে ক্ষতি করছি, তাতে ভবিষ্যতের পৃথিবী বাসযোগ্য থাকেনি আর। দেখুন, আমরা মাঝামাঝি সময়ে আছি। ভবিষ্যত আমরা এখনও জানি না। কিন্তু ভবিষ্যতের লোকজন জানে। ওরা অতীতে বাস করা আমাদের উপর ক্ষুব্ধ। কারণ, আমাদের কাজকর্মের ফলই ওরা ভোগ করছে। তো, ওরা কী করল? প্রথমে ওরা ঐ বিজ্ঞানীর কাজকর্ম সম্পর্কে জেনে গেল। জেনে গেল, তিনি অমন একটা অ্যালগোরিদম সৃষ্টি করেছিলেন, যা দিয়ে পৃথিবী উল্টোদিকে নিয়ে যাওয়া যাবে। ওরা ঠিক করল, যেহেতু আমরাই বাস করতে পারছি না, সেহেতু পৃথিবী অতীতের দিকেই যাত্রা করা শুরু করুক। ওরা জানলো অ্যালগোরিদম সম্পর্কে, কিন্তু ওটা পেল না। কারণ, ওটা তাদের সময়েই নেই। বিজ্ঞানী ঐ অ্যালগরিদম পার্ট পার্ট করে অতীতেরই নয়টি সুরক্ষিত কোনো জায়গায় পুঁতে রেখেছেন। এবং তাদের সাহায্য দরকার হলো। কিন্তু কে সাহায্য করবে তাদের? বিশেষ করে, অতীতের কে চাইবে নিজেদের মৃত্যু?
ওরা পেল স্যাটোরকে। যাকে সিনেমায় বলা হয়েছে, উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত জায়গায় থাকা উপযুক্ত ব্যক্তি। স্যাটোরকে ওরা টার্নস্টাইল ব্যবহার করে ঐ টার্নস্টাইল নির্মাণের পদ্ধতি, ব্লুপ্রিন্ট, কাগজপত্র সহ সোনার বিস্কুট পাঠালো। ডিল। ভবিষ্যতের সঙ্গে স্যাটোর যোগাযোগ রাখবে টাইম ক্যাপসুল ও পোস্টারিটির মাধ্যমে। পোস্টারিটি হচ্ছে, আপনার অমন একটা যোগাযোগ ব্যবস্থা, অমন একটা রেকর্ড, যেটার গন্তব্য ভবিষ্যত কিন্তু আপনার দিক থেকে ফলাফল বর্তমান। আপনি যদি ভবিষ্যতের কারোর নিকট পৌঁছে দিতে পারেন, আপনার সামনে একজন বন্দুকধারী দাঁড়িয়ে আছে এই সময়ে, এই লোকেশনে। ঐ ভবিষ্যতের মানুষ টার্নস্টাইল ব্যবহার করে আপনার সময়ে এসে আগ থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে আপনার সামনের বন্দুকধারীকে ধরাশায়ী করে ফেলতে পারবে। এই যে আপনি সংবাদ পাঠালেন, আর উনি যোগাযোগ করতে সক্ষম হলো, জটিলতা বাদ দিয়ে সহজ কথায় এটাই পোস্টারিটি। পোস্টারিটির ব্যবহার এই সিনেমায় আরও নানান জায়গায় দেখা যায়। তারপর, গল্পে আসি। স্যাটোরকে ভবিষ্যতের লোকজন যোগাযোগ করে গাইড করল, যাতে সে নয়টা জায়গা খুঁজে বের করে অ্যালগোরিদম একত্রিত করে ভবিষ্যতের নিকট পাঠিয়ে দিতে পারে টাইম ক্যাপসুলের সাহায্যে। আট'টা পার্ট স্যাটোর জোগাড় করেও ফেলে। সমস্যা বাঁধে শেষ পার্টে। সিনেমায় এই পার্টকে বলা হয়েছে, প্লুটোনিয়াম-২৪১। সিনেমা মূলত শুরু হয়, এই শেষ পার্টের সংগ্রহকালীন ঘটনা দিয়ে।

এই পার্ট সংগ্রহ করার জন্য ইউক্রেনের অপেরা হাউসে আক্রমণ করে স্যাটোর। এই জায়গায় তিনটা দল আক্রমণ করে একই সময়। স্যাটোরের দল। ইউক্রেন পুলিশ। ও সিআইএ এজেন্ট। সিনেমার প্রধান চরিত্র, যার নাম বলা হয়নি। ডাকা হয়েছে প্রোটাগনিস্ট নামে। এই প্রোটাগনিস্ট মূলত সিআইএ এজেন্ট। ইউক্রেন পুলিশের সঙ্গে গোপনে মিশে তার মূল দায়িত্ব থাকে, অ্যালগরিদমের ঐ সর্বশেষ পার্টটা সংগ্রহ করা। সংগ্রহ করেও সে। এবং ধরা খায়। পার্ট'টা চলে যায় ইউক্রেন পুলিশের হাতে। এবং সে পিল খেয়ে সুইসাইডের চেষ্টা করে কোনোরকম গোপন সংবাদ ফাঁস না করে। পরে বেঁচে যায়। জানতে পারে, এটা একটা টেস্ট ছিল, পিলটা ছিল ফেইক। কারণ, তাদের একজন বিশ্বস্ত মানুষ প্রয়োজন ছিল একটা মিশনের জন্য। মিশনটা হলো, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের হাত থেকে পৃথিবীকে বাঁচানো। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বলতে ঐ সম্ভাব্য বিপদটাকেই বলা হয়েছে। অ্যালগোরিদমের সব পার্ট যদি স্যাটোর ভবিষ্যতের লোকজনের হাতে দিয়ে দেয়, ওরা পৃথিবীর সময় উল্টে দেবে। প্রোটাগনিস্টের কাজ হলো, অ্যালগোরিদম উদ্ধার করা ও পৃথিবীকে বাঁচানো।

প্রোটাগনিস্ট প্রথম রিভার্স বুলেট দেখতে পায় অপেরা হাউসে। পিঠে লাল সুতোয় বাঁধা আংটাওয়ালা একটা ব্যাগ নিয়ে একজন মুখোশধারী ব্যক্তি ঐ রিভার্স বুলেট ব্যবহার করেছিল প্রোটাগনিস্টকে বাঁচাতে। দ্বিতীয়বার প্রোটাগনিস্ট ঐ রিভার্স বুলেট সম্পর্কে মোটামুটি একটা ধারণা পায় লরার নিকট থেকে। লরা জানায়, শুধু বুলেট নয়, এইরকম আরও কিছু রিভার্স জিনিসপত্র পাওয়া গেছে।প্রোটাগনিস্ট বুলেট দেখে চিনতে পারে এইগুলো কোন দেশ থেকে বিক্রি করা হয়েছে। ভারত। প্রোটাগনিস্ট ভারত আসে। তার সাহায্য দরকার পড়ে। টেনেট অর্গানাইজেশন থেকে একজন যুবক পাঠানো হয়, সাহায্যের জন্য। তার নাম নীল। দুইজন মিলে অস্ত্র বিক্রি করেন যিনি, উনার নিকট পৌঁছায়। উনার নাম প্রিয়া। প্রিয়া টেনেট সম্পর্কে জানেন। একটা তথ্য তিনি দেন, যখন তিনি স্যাটোরের কাছে এইসব অস্ত্র বিক্রি করেছেন, তখন এইগুলো ঠিক ছিল। রিভার্স ছিল না। অর্থাৎ, স্যাটোরের নিকট এমন কিছু আছে, যেখানে সে নির্দিষ্ট বস্তু রিভার্স করতে পারে। স্যাটোরের সঙ্গে প্রোটাগনিস্টের সাক্ষাৎ দরকার। অত সহজে এই ব্যক্তির সাক্ষাৎ পাওয়া যাবে না। তাই, প্রিয়া একজন ব্রিটিশ ইন্টেলিজেন্স অফিসারের ঠিকানা দেয়। তার নাম, মাইকেল ক্রসবি। মাইকেলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে প্রোটাগনিস্ট জানতে পারে, স্যাটোরের সঙ্গে সাক্ষাৎ-এর একমাত্র সহজ মাধ্যম স্যাটোরের স্ত্রী কেট। কেটের সঙ্গে স্যাটোরের সম্পর্ক ভালো না। কেট স্যাটোরের নিকট একটা অঙ্কনচিত্র বিক্রি করেছিলেন, যেটা মূলত ফেইক অঙ্কনচিত্র ছিল। স্যাটোর এই অঙ্কনচিত্রটাই কেটকে ব্ল্যাকমেইলের কাজে ব্যবহার করেন। কারণ, আইনের সহায়তা নিলে ফেইক অঙ্কনচিত্র বিক্রির অপরাধে কেটকে জেলে যেতে হবে। আর এইসবের মাঝখানে পড়ে স্যাটোর আর কেটের একমাত্র পুত্র সন্তান ম্যাক্স কষ্ট পাবে। নিজের পুত্রের সঙ্গেও কেটকে দেখা করতে দেয় না স্যাটোর। মোটামুটি বেশ বিষাক্ত বৈবাহিক সম্পর্ক তাদের। এটার সুবিধা নেয় প্রোটাগনিস্ট।
মাইকেল ক্রসবি আরেকটা তথ্য দেয়। এই তথ্যটা গুরুত্বপূর্ণ। পরবর্তীতে এই তথ্য কাজে লাগবে প্রোটাগনিস্টের। তথ্যটা হচ্ছে, যেদিন অপেরা হাউজে আক্রমণ হলো, চৌদ্দ তারিখ, ঠিক একইদিনে স্টাল্সক-১২ নামক একটা জায়গায়ও বিস্ফোরণ হয়।
মাইকেল ক্রসবি থেকে তথ্য নিয়ে কেটের সঙ্গে দেখা করে প্রোটাগনিস্ট। এবং এই দৃশ্যটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এখানে কথায় কথায় কেট একটা তথ্য দেয়। ভিয়েতনামে স্যাটোরের একটা ইয়ট আছে। ওখানে স্যাটোরের সঙ্গে শেষবার চমৎকার একটা সময় কাটিয়েছিল কেট। শেষবার। তারপর হঠাৎ তাদের মধ্যে ঝগড়া হয় ওখানে। কেট তার পুত্র ম্যাক্সকে নিয়ে ইয়ট ছেড়ে চলে যায়। যখন ফিরে আসে, তখন কেট দেখতে পায় ইয়টের উপর থেকে একজন তরুণী লাফ দিচ্ছে পানিতে। আর স্যাটোর ইয়টে নেই। এই তথ্যটা মনে রাখুন।
প্রোটাগনিস্ট কেটের নিকট থেকে এটাও জেনে নেয়, কেট থেকে যে ফেইক অঙ্কনচিত্র কিনেছিল স্যাটোর, ওটা রাখা আছে ওসলো এয়ারপোর্টের সুরক্ষিত একটা জায়গায়। প্রোটাগনিস্ট একটা প্ল্যান করে। ঐ জায়গায় একটা বিমান হামলা চালাবে, ছবি নষ্ট হলে তো ভালো নাহলে ওরাই চুরি করে নেবে ছবিটা। ছবিটা হচ্ছে স্যাটোরের একমাত্র অস্ত্র, কেটকে ব্ল্যাকমেইল করার। ছবিই যদি না থাকে, তাহলে কেট মুক্ত।
.
প্রোটাগনিস্ট ও নীল প্ল্যান করে ওসলো এয়ারপোর্টে বিমান হামলার। ওরা ব্যবসায়ীর ছদ্মবেশে জায়গাটায় প্রবেশ করে। হামলা হয়। যেহেতু জায়গাটা সুরক্ষিত, হামলার সঙ্গে সঙ্গে দশ সেকেন্ডের ভেতর ওখানকার জায়গা অক্সিজেনশূন্য হয়ে পড়ে। দরজা জানালা সব অটোম্যাটিক বন্ধ হয়ে যায়। ওরা প্ল্যানমাফিক একদম কেন্দ্রের রুমে পৌঁছে। ওখানে দু'টো দরজা। একটা লাল ও একটা নীল। প্রোটাগনিস্ট লাল দরজায় ঢোকেন, নীল নীল দরজায়। এতক্ষন অবধি আপনি দেখছিলেন একটা সাধারণ স্পাই থ্রিলার। নোলান এসে হাজির হয়েছেন এখন। আর আপনি আরাম করে হাত পা ছেড়ে এই সিনেমা দেখতে পারবেন না। প্রোটাগনিস্ট ও নীল যে দু'টো দরজার ভেতর পৌঁছায়, ওটা মূলত স্যাটোরের লুকিয়ে রাখা একটা টার্নস্টাইল। সে নানান জায়গায় টার্নস্টাইল রেখেছে নিজের সুবিধামতোন। মানুষদের থেকে লুকিয়ে। এটাও অমন একটা টার্নস্টাইল। এই জায়গায় নীল ও প্রোটাগনিস্টকে আক্রমণ করে দুইজন মুখোশধারী। নীলকে মুখোশধারী ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়, পালানোর আগে নীল মুখোশধারীর মুখোশ খুলে ফেলে, এবং দেখে ফেলে তার মুখটা। আর অন্যদিকে প্রোটাগনিস্টকে আক্রমণ করে অন্য মুখোশধারী। এই অ্যাকশন সিনটা আমি কতশত বার যে দেখেছি হিসাব নেই। একবার ভেবে দেখুন, একজন মানুষ লড়ছেন রিভার্স একজনের সঙ্গে। ঐ ব্যক্তি রিভার্স, ঐ ব্যক্তির বন্দুক রিভার্স, বুলেট রিভার্স এমনকি ঐ ব্যক্তি যে দস্তাদস্তি করছে, সেটাও রিভার্স। ভাবতে হয়তো অতটাও কষ্ট হয় না। কিন্তু ভাবুন, এই অ্যাকশন দৃশ্যটা যিনি স্ক্রিপ্ট করেছেন তিনি কী পরিমাণ ক্রিয়েটিভ মগজের অধিকারী। তাকে দুইটা রিভার্স মানুষের অ্যাকশন দৃশ্য ভাবতে হয়েছে, প্রতিটা সেকেন্ড, সবগুলোই উল্টোভাবে। 
প্রোটাগনিস্ট যখন রিভার্স মুখোশধারীকে ধরাশায়ী করে মেরে ফেলতে চায়, নীল এসে বাঁচিয়ে দেয় তাকে। মুখোশধারী বের হয়ে পালিয়ে যায়। ওরা ওসলো এয়ারপোর্টে গিয়েছিল ছবিটা চুরি করতে, অথবা ধ্বঃস করতে। ছবি পেল না। পেল অদ্ভুত একটা যন্ত্র। টার্নস্টাইল। কিন্তু বিমান হামলায় অন্তত এটুকুন নিশ্চিত, ছবি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে। কিন্তু ঐ রিভার্স মুখোশধারী দুইজন কে ছিল? উত্তরের জন্য প্রোটাগনিস্ট ছুটল প্রিয়ার কাছে। প্রিয়া তখন জিজ্ঞেস করল, টার্নস্টাইল থেকে দুইজন মুখোশধারী কি একইসঙ্গে বের হয়েছিল দুই দরজায়? প্রোটাগনিস্ট হ্যা উত্তর দেয়ার পর প্রিয়া কয়েকটা তথ্য দিলো।
প্রথম তথ্য। ওরা দুইজন মুখোশধারী আলাদা নয়, একজনই। তবে দুইটা সময়ে চলছে। কীভাবে?
ধরুন, একটা দোকান। আপনি দোকান থেকে হেঁটে টার্নস্টাইলের লাল দরজায় ঢুকলেন। দুই মিনিট সময় লাগল। লাল দরজায় ঢুকে নীল দরজায় বের হলেন। যখনই নীল দরজা দিয়ে বের হবেন আপনি, তখন লাল দরজা দিয়েও আপনি বের হবেন। তবে উল্টো। দেখুন, একই সময় আপনার দু'টো অস্তিত্ব বিদ্যমান। একটা সময়ে সামনে চলছে, একটা সময়ে পেছনে। নীল দরজায় যখন আপনি হাঁটবেন সামনে, দেখবেন আপনার পাশে আপনারই লাল দরজার অস্তিত্বটা হাঁটছে, তবে উল্টোদিকে। এটা আপনার দৃষ্টি থেকে। কারণ, তখন জগত উল্টোদিকে রিভার্স। আপনি দোকান পর্যন্ত হেঁটে যাবেন, আপনার লাল অস্তিত্বটাও দোকান পর্যন্ত হেঁটে যাবে, উল্টো। এখন দেখুন, লাল মানুষটার জন্য নীল মানুষটা রিভার্স, নীল মানুষটার জন্য লাল মানুষটা রিভার্স। একই ঘটনা ওসলো এয়ারপোর্টের টার্নস্টাইলে হয়েছিল। নীলকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া মুখোশধারীর জন্য কাঁচের এপাশে এই দরজায় চলা প্রোটাগনিস্টের সঙ্গে দস্তাদস্তি ছিল রিভার্স।
দ্বিতীয় তথ্য। স্যাটোর একটা জিনিসের জন্য মরিয়া। অপেরায়ও আক্রমণ চালিয়েছিল এই জিনিসের জন্য। নাম, প্লুটোনিয়াম-২৪১। প্রিয়া কী করে জানলো স্যাটোর প্লুটোনিয়াম খুঁজছিল। এটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নের উত্তর একটু পর পাওয়া যাবে। এবং সর্বশেষ তথ্য, স্যাটোরকে মারা যাবে না। স্যাটোর কী করে ভবিষ্যতের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে, এবং স্যাটোরের প্ল্যান কী জানার আগপর্যন্ত ওকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

প্রোটাগনিস্ট কেটকে জানায় ছবির ব্যাপারে। কেট ভাবল, যাক মুক্তি পাওয়া গেল স্যাটোরের নিকট থেকে। কিন্তু স্যাটোর সবসময় দশ কদম এগিয়ে চলা মানুষ। সে টার্নস্টাইল ব্যবহার করে অহরহ। ফলে অধিকাংশ ঘটনাই আগে থেকে জানতে পারে। ছবিটা সে ওসলো থেকে সরিয়ে নিয়েছিল আগেই তাই। প্রোটাগনিস্টের সঙ্গে স্যাটোরের সাক্ষাৎ হয়। প্রোটাগনিস্ট স্যাটোরকে নিজের প্রতি আগ্রহী করে তোলে 'অপেরা'র ঘটনা বলে। কারণ, ঐ ঘটনা গোপন। স্যাটোর বুঝতে পারে, প্রোটাগনিস্ট যেমন তেমন কেউ নয়। একে দিয়ে কাজ করানো সম্ভব। প্রোটাগনিস্ট ঐ রাতে ইয়টে লুকিয়ে স্যাটোরের কাজকর্ম খেয়াল করতে গিয়ে ধরা খেয়ে প্রাণ হারাতে বসে। এবং শেষমেষ ডিল হয়। প্রোটাগনিস্টের ভালো করেই জানা আছে, প্লুটোনিয়াম কিভাবে কোন উপায়ে ইউক্রেন পুলিশ কোথায় নিয়ে যাবে। যাওয়ার পথে রাস্তায় প্রোটাগনিস্ট আক্রমণ করে ওটা চুরি করে নিয়ে স্যাটোরকে দেবে। বিনিময়ে স্যাটোর মুক্তি দেবে কেটকে।
প্রোটাগনিস্ট ও নীল প্ল্যান করে প্লুটোনিয়াম চুরি করে রাস্তায়। এবং চুরির পর বাক্স খুলে দেখতে পায়, প্লুটোনিয়াম নেই ভেতরে, বরং একটা যন্ত্র রাখা। যেটা অ্যালগরিদমের সর্বশেষ পার্ট। লক্ষ্য করুন, প্রোটাগনিস্ট তখনও জানে না অ্যালগরিদম সম্পর্কে। রাস্তায় এই পার্ট নিয়ে আসার সময় এই সিনেমার আরেকটা জট বাঁধা অ্যাকশন দৃশ্য শুরু হয়। ওরা দেখতে পায়, একটা গাড়ি উল্টোদিকে চলছে। উল্টোদিকে চলেই তাদের আক্রমণ করছে। এই গাড়িটা স্যাটোরের। প্রোটাগনিস্ট আরও একটা গাড়ি দেখতে পায়, যেটা অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে পড়েছিল। কিন্তু নিজ থেকেই ঠিক হয়ে দু'টো গাড়ির মাঝখানে এসে রিভার্স চলছে। মনে রাখুন, প্রোটাগনিস্ট ও নীল যে গাড়িতে আছে, ওটা স্বাভাবিক। বাকি দু'টো গাড়িই রিভার্স। মাঝখানের গাড়িটা কার, সেটা প্রোটাগনিস্ট জানে না। কিন্তু তিন নাম্বার গাড়িতে আছে স্যাটোর। তার মুখে মাস্ক। এবং সে কেটের মাথায় গুলি ধরে রেখেছে যাতে প্লুটোনিয়ামটা স্যাটোরকে দিয়ে দেয় প্রোটাগনিস্ট। যেহেতু প্রোটাগনিস্ট জানে না, এটাই অ্যালগরিদমের সর্বশেষ পার্ট, আর যেহেতু এটা প্লুটোনিয়ামও না, তখন সে ওটা মাঝখানের গাড়ির বনেট ব্যবহার করে স্যাটোরকে ছুঁড়ে দেয় বাক্সটা। নীল কিন্তু এখানে নিষেধ করে, এটা না দিতে।অর্থাৎ নীল জানে, এই জিনিসটা গুরত্বপূর্ণ। এই তথ্যটাও গুরুত্বপূর্ণ। নীল এই সিনেমার চূড়ান্ত রহস্যময় চরিত্র। কয়েকদিন মাত্র দেখা ওদের, অথচ নীল জানে প্রোটাগনিস্ট কী খেতে পছন্দ করে, কোথায় কিভাবে প্ল্যান করে, নীলের আচার আচরণ দেখেই মনে হয়, প্রোটাগনিস্টকে সে অনেক আগ থেকে চেনে।
যাই হোক, ঘটনায় আসি।
স্যাটোর প্লুটোনিয়াম পাওয়ার পর কেটকে ঐ রিভার্স গাড়িতে রেখেই বের হয়ে যায়। দেখুন, এখন দু'টো গাড়ি মাত্র। একটা গাড়িতে প্রোটাগনিস্ট ও নীল। স্বাভাবিক গাড়ি। অন্য গাড়িতে কেট। স্বাভাবিক সময়ে চলা কেট। কিন্তু তার গাড়িটা রিভার্স। প্রোটাগনিস্ট অনেক কষ্টে কেটকে বাঁচায়। এবং দুইজনই স্যাটোরের হাতে ধরা পড়ে। নীল অন্যদিকে থাকায় বেঁচে যায়। স্যাটোরের লোকেরা প্রোটাগনিস্টকে ধরে এনে একটা টার্নস্টাইলের সামনে নিয়ে আসে। লাল দরজায়। চেয়ারে বসায়। কাঁচের ওপাশে নীল দরজা। ওখানে স্যাটোর কেটকে বসায়। লক্ষ্য করুন, লাল দরজার সবাই স্বাভাবিক। নীল দরজার ওপাশেও সবাই স্বাভাবিক। চেয়ারে বসে থাকা কেট স্বাভাবিক। রিভার্স তাহলে কে? উত্তর হচ্ছে স্যাটোর। সে রিভার্স কেন হলো? যেখানে প্রোটাগনিস্ট তাকে প্লুটোনিয়াম দিয়েই দিয়েছে। এখন আসি এই দৃশ্যের সব জটিলতার কেন্দ্রবিন্দু কোথায়?
মনোযোগ দিন।

'টেম্পোরাল পিন্সার মুভমেন্ট।'
স্যাটোর আশ্রয় নিয়েছিল এই পদ্ধতির। এই পদ্ধতি কিভাবে কাজ করে? ধরুন, একটা ঘটনা হবে। যেমন, একজন হিটম্যানকে টাকা দিয়েছেন আপনি, হিটম্যান একজনকে খুন করবে। খুন করবে বরাবর দশটায়। জায়গা, একটা মার্কেট। খেয়াল করুন, তিনটা বিষয়। মানুষ, স্থান, সময়। স্থান হচ্ছে, মার্কেট। মানুষ হচ্ছে, হিটম্যান। সময় হচ্ছে দশটা। আপনি হিটম্যানকে বিশ্বাস করেন না। আপনি সিওর নন, সে তো টাকা নিয়ে ফেলেছে। এখন যদি খুন না করে ভেগে যায়। অথচ ঐ সময়ে খুন করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনি বিষয়টার আগাগোড়া নজরে রাখতে চান। এইজন্য আপনি প্রথমে পাঁচ পাঁচ করে দশজনের দু'টো দল করলেন। একটা লাল দল। একটা নীল দল। লাল দলকে ঠিক দশটায় লুকিয়ে পাঠালেন হিটম্যানের সঙ্গে। তারা খেয়াল রাখছে হিটম্যানকে। নীল দল বসে অপেক্ষা করল দশটা দশ মিনিট পর্যন্ত। দুই দলের মধ্যে যোগাযোগ আছে। লাল দল নীল দলকে প্রতিটা মুহূর্তের আপডেট জানিয়ে গেল, জানিয়ে গেল হিটম্যানের গতিবিধি। জানালো হিটম্যান খুন করেনি ঐ লোককে, তবে অন্য একজন খুন করেছে। এখন নীল দল কী করল, ঠিক দশটা দশ মিনিটে তারা টার্নস্টাইলের লাল দরজা দিয়ে ঢুকে নীল দরজা দিয়ে বের হয়ে আসলো। এখন তাদের সময় উল্টো। দশ মিনিট থেকে নয় মিনিট, নয় মিনিট থেকে আট মিনিটে চলে যাবে সময়। জগত উল্টোদিকে চলছে। নীল দল স্বাভাবিক চলছে মুখে মাস্ক নিয়ে। এবং এই নীল দল কিন্তু সব জানে। কারণ, তারা একটা ঘটে যাওয়া সময়ে চলছে। লাল দল জানিয়েছে তাদের ইতোমধ্যে। কোন গাড়ি কোন সময় অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে, কোন লোক কোন জায়গা দিয়ে হেঁটে গেছে সব। নীল দল সময়ের উল্টোদিকে দশ মিনিট চলবে। ঠিক দশটায় গিয়ে পৌঁছুবে। এবং দেখবে, হিটম্যান ভেগে যাচ্ছে। এবং নীল দলের আপনি রিভার্স ঐ জগতেই লোকটিকে মেরে ফেলবেন। তাহলে দেখা যাচ্ছে, খুনটা আপনি করেছেন। টার্নস্টাইলে ঢোকার আগে লাল দল থেকে যে সংবাদ দিয়েছিল, 'হিটম্যান খুন করেনি, কিন্তু একটা অপরিচিত লোক খুন করেছে লোকটাকে', এই অপরিচিত লোকটাই হচ্ছেন আপনি। এটা হলো টেম্পোরাল পিন্সার মুভমেন্টের সুবিধা। সমস্যা একটাই। এখানে যেটা ঘটার, সেটা ঘটবেই। এই মুভমেন্টে অংশ নিয়ে আপনি কোনোকিছু পরিবর্তন করতে পারবেন না, যা ঘটার তা ঘটবেই। 
প্লুটোনিয়ামের জন্য স্যাটোর টেম্পোরাল পিন্সার মুভমেন্ট পদ্ধতির আশ্রয় নিয়েছিল। প্রোটাগনিস্টের উপর তার বিশ্বাস নেই। সে দু'টো দল ভাগ করে লাল দলকে রেখেছিল প্রোটাগনিস্টকে নজরে রাখার জন্য। আর নিজে টার্নস্টাইলে ঢুকে নীল দরজায় বের হয়ে এসেছিল। এবং প্রোটাগনিস্টের প্রতিটি পদক্ষেপ সম্পর্কে অবগত হয়েছিল। প্লুটোনিয়ামের যে বাক্স প্রোটাগনিস্ট তাকে দিয়েছিল মাঝখানের একটা রিভার্স গাড়ির বনেট ব্যবহার করে, ঐ বাক্সে প্লুটোনিয়াম অর্থাৎ অ্যালগরিদমের পার্ট'টা ছিল না। এই পার্ট'টা কোথায় জানার জন্য রিভার্স স্যাটোর স্বাভাবিক কেটকে রিভার্স বুলেটে গুলি করে প্রোটাগনিস্ট থেকে কথা আদায় করার জন্য।

এইসবের মধ্যে নীল যে ব্যাকআপ টিম ডেকেছিল, তারা এসে হাজির। এই টিমটাও টেনেট অর্গানাইজেশনের অংশ। এদের নেতৃত্ব দিচ্ছে, আইভ্স। প্রোটাগনিস্ট বুঝতে পারে না, স্যাটোর আগ থেকে কীভাবে তার প্রতিটি পদক্ষেপ বুঝতে পেরেছিল। কারণ সে তখনও জানে না, টেম্পোরাল পিন্সার মুভমেন্ট কিভাবে কাজ করে। আইভ্স প্রোটাগনিস্টকে টেম্পোরাল পিন্সার মুভমেন্ট সম্পর্কে বোঝায়। কেট তখন গুলিবিদ্ধ। তাও রিভার্স বুলেট। রিভার্স বুলেট স্বাভাবিক বুলেটের চেয়ে ভয়ানক। এটা ধীরে ধীরে উল্টো প্রভাব ফেলবে ক্ষতে। সাধারণ ক্ষত ধীরে ধীরে শুকায়, এটা হবে উল্টো। এবং কেটের মৃত্যুর সম্ভাবনাও আছে এর প্রভাবে। এর থেকে বাঁচার উপায়, ক্ষত যেহেতু রিভার্স, ক্ষত শুকোনোর জন্য জগতটাও রিভার্স করে নিতে হবে। প্রোটাগনিস্ট সিদ্ধান্ত নেয়, তারা রিভার্স হবে। সে, নীল ও গুলিবিদ্ধ কেট। তারা এই টার্নস্টাইল ব্যবহার করে পেছনের দিকে চলে যাবে। তা কিন্তু আবার দশ পনের মিনিটের জন্য নয়, ওরা পুরো কয়েকটা দিন চলে যাবে পেছনে। এখানে সমস্যা একটা। একবার এই টার্নস্টাইলে ঢুকে নীল দরজা দিয়ে বের হলে সেটা পেছনের দিকে যেতে থাকবে, যেতেই থাকবে। আরেকটা টার্নস্টাইল না পেলে তারা আর কখনই স্বাভাবিক সময়ে নিজেদের ফিরিয়ে নিতে পারবে না। স্বাভাবিক সময়ে ফেরত আসার জন্য তাদের দরকার আরেকটা টার্নস্টাইল। কোথায় পাবে এটা?
.
তখন প্রোটাগনিস্টের মনে পড়ে ওসলো এয়ারপোর্টের টার্নস্টাইলের কথা। কিন্তু ওখানে তো টাইট সিকিউরিটি। কী করে ওরা টার্নস্টাইলে ঢুকবে? এখন সিনেমাটা প্রথম থেকে মনোযোগ দিয়ে দেখলে, মনে থাকার কথা, ওসলো এয়ারপোর্টের সিকিউরিটি শুধুমাত্র একটা দিনই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কোনদিন? যেদিন প্রোটাগনিস্ট ও নীল ছবি নষ্ট করার জন্য প্রথমবার ওসলো এয়ারপোর্টে বিমান হামলা চালিয়েছিল। অতএব, এই একটাই সময় পাওয়া যাবে সিকিউরিটি ছাড়া। প্রোটাগনিস্ট, নীল ও গুলিবিদ্ধ কেট সিদ্ধান্ত নেয়, তারা ঠিক ঐ তারিখ অবধি পেছনে চলে যাবে। যে তারিখে বিমান হামলার ঘটনাটা ঘটেছিল।

এখন, প্রোটাগনিস্ট নীল ও গুলিবিদ্ধ কেট টার্নস্টাইলে ঢুকে নীল দরজায় বের হয়ে আসলো। এবং প্রোটাগনিস্ট এইখানে একটা বোকামো করল। নীল ও গুলিবিদ্ধ কেটকে একটা সুরক্ষিত গাড়িতে তুলে দিয়ে নিজে বের হয়ে গেল স্যাটোরকে আটকানোর জন্য। কেটের যাতে আর কোনো ক্ষতি না হয়। অথচ যা হওয়ার হয়ে গেছে। খেয়াল করুন, প্রোটাগনিস্ট স্যাটোরকে আটকানোর জন্য যাচ্ছে। স্যাটোর যা করার করে ফেলেছে, তাকে আটকানোর চেষ্টা বৃথা। নীল সতর্ক করে, যেটা ঘটার সেটা ঘটবেই। প্রোটাগনিস্ট রিভার্স গিয়ে তার পরিবর্তন করতে পারবে না। তাও প্রোটাগনিস্ট যায়। গাড়ি নিয়ে। এবং আমরা জানতে পারি দু'টো তথ্য।
প্রথম তথ্য: একটু আগে ঘটে যাওয়া রেইসে স্যাটোর আর তাদের মাঝখানে যে গাড়িটা ছিল, ওটাই মূলত এই গাড়ি, এখন প্রোটাগনিস্ট যে গাড়িটা নিয়ে স্যাটোরকে আটকাতে যাচ্ছে।
দ্বিতীয় তথ্য: এই গাড়ির বনেট ব্যবহার করেই ঐ প্রোটাগনিস্ট স্যাটোরকে প্লুটোনিয়ামের বাক্স ছুঁড়ে দিয়েছিল। বাক্স ছোঁড়ার সময় প্লুটোনিয়াম মূলত মাঝখানের এই গাড়ির ভেতরই ছিল।
অতএব, প্লুটোনিয়াম মূলত এখন প্রোটাগনিস্ট যে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছে, সেই গাড়ির ভেতরই। স্যাটোর তা দেখে ফেলেছে এইবার। স্যাটোর তার লোকদের ফোন করে জানায়, প্রোটাগনিস্ট এই গাড়িতে চড়ার আগেই প্লুটোনিয়াম যাতে নিয়ে নেয় এই গাড়ি থেকে। প্রোটাগনিস্টের গাড়ি অ্যাক্সিডেন্ট করায় স্যাটোর তারপর। গাড়িতে আগুন ধরিয়েও দেয়। নীল যেটা বলেছিল, যেটা ঘটার সেটা ঘটবেই। এবং সেটাই ঘটল। স্যাটোর অ্যালগরিদম পেয়ে গেল, এবং অ্যালগরিদম পাওয়ার জন্য সবচেয়ে বড়ো সাহায্যটা নিজের অজান্তে করল প্রোটাগনিস্ট নিজেই। আগুনে প্রোটাগনিস্ট মারা গেল না। কারণ, রিভার্স জগতের নিয়ম অনুযায়ী আগুনে জ্বলার বদলে ঠাণ্ডা বরফে জমাট বেঁধে একপ্রকার বেঁচে গেল প্রোটাগনিস্ট। এবং নীল ও গুলিবিদ্ধ কেট তাকে উদ্ধার করল।
প্রোটাগনিস্ট, নীল ও কেট। এখন এই তিনজন যাচ্ছে, সময়ের পেছনে। ঐ দিনটায়। যেদিন ওসলো এয়ারপোর্টে বিমান হামলা হয়েছিল। চট করে পৌঁছুতে পারছে না। তাদের তিনজনের পার করা লাগছে প্রতিটা দিন। উল্টো। এই সময়ে গুলিবিদ্ধ কেটের ক্ষত ধীরে ধীরে শুকায়। এবং প্রোটাগনিস্টকে নীল অ্যালগরিদম সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়। এটা কেন ক্ষতিকর, এটা কী করতে পারে, এটার আবিষ্কার কে করেছেন। তারপর নির্দিষ্ট ঐ দিন, ওরা তিনজন ওসলো এয়ারপোর্টে পৌঁছায়। দেখতে পায় রিভার্স বিমান হামলা। নীল ও গুলিবিদ্ধ কেট এয়ারপোর্টের অন্যপথ দিয়ে যায়। প্রোটাগনিস্ট একটা দরজার সামনে দাঁড়ায়। হঠাৎ একটা উল্টো ধাক্কায় দরজার ওপাশে চলে যায়। এবং ঐ প্রোটাগনিস্টের সঙ্গেই তার দস্তাদস্তি শুরু হয়। এইবার রিভার্স। বুঝতে পারে, প্রথমবার ওসলো এয়ারপোর্টে প্রথম প্রোটাগনিস্ট যে মুখোশধারীর সঙ্গে দস্তাদস্তি করেছিল, সে আসলে নিজেই। এইবার দ্বিতীয় অর্থাৎ বর্তমান প্রোটাগনিস্ট অতীতের প্রোটাগনিস্টের সঙ্গে দস্তাদস্তি করে টার্নস্টাইলে ঢুকে নিজেদের ঐ সময়ের সঙ্গে ঠিকঠাক করে নেয়। নীল ও গুলিবিদ্ধ কেটও টার্নস্টাইলে ঢুকে সময়ের সঙ্গে ঠিক করে নেয় নিজেদের। এখন সময় ঠিকঠাক। এবং ওরা হচ্ছে ভবিষ্যত থেকে আসা আগন্তুক। যারা জানে, এই কয়েকদিন কী কী ঘটবে। নীল তখন ওসলো এয়ারপোর্টে জেনে গিয়েছিল, মুখোশধারীটা ভবিষ্যত থেকে আসা প্রোটাগনিস্ট। তাও কিছু জানায়নি। কারণ, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কিছু না জেনে থাকাই এই রিভার্স জগতের জন্য ভালো। নাহলে ঘটনা ভজঘট পাকাবে।
.
সিনেমার পরবর্তী অংশ। এখন স্যাটোরের হাতে অ্যালগরিদমের সব পার্ট। সে যেকোনো সময় এই নয়টা পার্ট এক করে ভবিষ্যতে পাঠিয়ে দিতে পারবে টাইম ক্যাপসুলের মাধ্যমে। আর একবার পাঠালেই পৃথিবী ধ্বঃস। প্রোটাগনিস্ট আরেকটা কাজ করে। সে প্রিয়ার সঙ্গে দেখা করে। প্রথমবার প্রিয়া যেদিন প্লুটোনিয়ামের কথা বলেছিল অতীতের প্রোটাগনিস্টকে, ঠিক তার দুইদিন আগে বর্তমান প্রোটাগনিস্ট প্রিয়ার সঙ্গে দেখা করে। এবং প্রিয়াকে জানায়, যাতে ঠিক দুই দিন পর অতীতের প্রোটাগনিস্ট যখন আসবে, তখন ঐ প্রোটাগনিস্টকে প্লুটোনিয়ামটা যে অ্যালগরিদমের সর্বশেষ পার্ট, এই সম্পর্কে জানিয়ে দেয় প্রিয়া। যাতে স্যাটোরের হাতে পার্ট'টা না পৌঁছায়। কিন্তু প্রিয়া রাজি হয় না। কারণ, যা ঘটার তা ঘটে গেছে, যা ঘটার তা ঘটবেই। এখন তা পাল্টানো অসম্ভব। তাছাড়া প্রিয়া নিজেও চায়, স্যাটোর অ্যালগরিদমের সব ক'টা পার্ট পেয়ে যাক। কারণ, এই পার্ট পেলেই সে বাকি আট'টা লুকানো পার্ট বের করে একত্রিত করবে। এবং টেনেট অর্গানাইজেশন সঠিক সময়ে গিয়ে তাকে আটকে ফেলবে। প্রিয়ার সঙ্গে প্রোটাগনিস্ট একটা ডিল করে। যেহেতু এই অপারেশটা গোপন এবং এই অপারেশন সম্পর্কে অর্গানাইজেশনের বাইরের কেউ জানার অধিকার নেই, অথচ কেট ইতোমধ্যেই সব জেনে গেছে, তাই টেনেট অর্গানাইজেশনের জন্য কেট একটা সম্ভাব্য ক্ষতি। অপারেশন শেষ হলে কেটকে মেরে ফেলা অস্বাভাবিক কিছু না। প্রোটাগনিস্ট প্রিয়া থেকে কথা নেয়, কেট ও তার বাচ্চার কোনো ক্ষতি করবে না প্রিয়া। ডিল ডান।
.
এখন, স্যাটোর অ্যালগোরিদমটা কোথায় রেখে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে টাইম ক্যাপসুলের সাহায্যে ভবিষ্যতে পৌঁছে দেবে? কোন জায়গা? কখন? প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাওয়া যাবে কেট থেকে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটা প্রশ্ন।
এক. স্যাটোর কেন ভবিষ্যতের মানুষকে নিজেদেরই পৃথিবী ধ্বঃসে সাহায্য করছে? বিষয়টা সোনার বিস্কিট নয়। যেখানে পৃথিবীই থাকবে না, সেখানে সোনা দিয়ে কী হবে। তাহলে? কেট জানায় বিষয়টা সোনা নয়। স্যাটোরের ক্যান্সার হয়েছে। সে আর বেশীদিন বাঁচবে না। যেহেতু নিজে বাঁচবে না, তাই নিজের সঙ্গে পুরো পৃথিবী ধ্বঃস হয়ে গেলেও ওর কোনো আফসোস থাকবে না।
দুই. স্যাটোরকে কেন মারা যাবে না? কারণ, স্যাটোর ব্যবহার করছে ডেড ম্যান সুইচ নামক একটা প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তি স্যাটোরের হার্টবিট সহ শারীরিক সমস্ত বিষয় পর্যবেক্ষণ করছে সবসময়। যদি স্যাটোর মরে যায়, তবে অ্যালগরিদম কোথায় রেখেছে সে, তার লোকেশন চলে যাবে ভবিষ্যতের মানুষদের নিকট অটোম্যাটিক। স্যাটোরকে তাই বাঁচিয়ে রাখতে হবে ততক্ষণ, যতক্ষণ না অ্যালগরিদমের সব পার্ট ঐ লোকেশন থেকে সরিয়ে নিয়ে আসা না হয়।
.
স্যাটোর জিদ্দি ও গোঁয়ার স্বভাবের মানুষ। কখনই হারতে শিখেনি অমন টাইপ। এখন, ক্যান্সারে তার মৃত্যু নিশ্চিত সে জানে। সে মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করবে না। তার হাতে আছে টার্নস্টাইল। সে টার্নস্টাইল ব্যবহার করে অতীতের সবচেয়ে সুন্দর সময়টায় চলে যাবে, গিয়ে ঐ সময়ে সুইসাইড করবে। লোকেশন চলে যাবে ভবিষ্যতে। সব শেষ। এই বিশেষ সময়টা কোনটা? প্রোটাগনিস্ট, নীল ও কেট ভাবতে বসে। অতীতের কেটের সঙ্গে প্রথমবার অতীতের প্রোটাগনিস্টের দেখার সময় একটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সে দিয়েছিল। তাদের শেষ সুন্দর সময়টা ছিল ভিয়েতনামের ইয়টে। চৌদ্দ তারিখ। ঝগড়ার পর ম্যাক্সকে নিয়ে কেট বের হয়ে পড়েছিল ইয়ট থেকে, ফিরে এসে দেখেছিল স্যাটোর নেই। আর ইয়ট থেকে একজন তরুণী পানিতে লাফ দিচ্ছে। ব্যাস। জায়গা জানা হয়ে গেল। তারিখটাও। চৌদ্দ তারিখ। যে তারিখে সিনেমাটা শুরু, সে তারিখে ফেরত যাওয়া শুরু করল সিনেমা।
.
প্রোটাগনিস্ট, নীল ও গুলিবিদ্ধ কেট টার্নস্টাইল ব্যবহার করে উল্টোদিকে যেতে শুরু করল। আরেকটা প্রশ্ন, এখন যে টার্নস্টাইল ব্যবহার করল তারা, এই টার্নস্টাইল কার? যেহেতু স্যাটোরের টার্নস্টাইল খুব সুরক্ষিত। ওগুলো ব্যবহার করা যাবে না। উত্তর হচ্ছে, এই টার্নস্টাইল নির্মাণ করেছে টেনেট অর্গানাইজেশন। এই টেনেট অর্গানাইজেশনটাই ভবিষ্যতে বানানো অর্গানাইজেশন। এখনকার নয়। এরা প্রোটাগনিস্ট, নীল, আইভস, প্রিয়া সহ আরও বেশ কিছু মানুষকে সাহায্য করছে অ্যালগরিদমগুলো যাতে স্যাটোর না পায়।

গল্পে আসি।
প্রোটাগনিস্ট, নীল ও গুলিবিদ্ধ কেট নিজেদের রিভার্স করে নিয়ে উল্টোদিকে যেতে লাগল। গন্তব্য, চৌদ্দ তারিখ। এই তারিখ নির্দিষ্ট করার আরও দু'টো কারণ আছে। মাইকেল ক্রসবি একটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছিলেন প্রোটাগনিস্টকে প্রথম সাক্ষাৎ-এ। যেদিন অপেরা হাউসে আক্রমণ হয়েছিল, একইদিনে স্টাল্সক-১২ জায়গায়ও বিষ্ফোরণ হয়েছিল। স্টাল্সক-১২ আবার স্যাটোরেরই শহর। এখানেই সে প্রথম কন্ট্রাক্ট পেয়েছিল ভবিষ্যতের মানুষদের থেকে। এই একইদিনে কেটের সঙ্গে শেষবার রোমান্টিক একটা সময় কাটিয়েছিল স্যাটোর। সব সুতোর জড়ো হলো এক জায়গায়। অর্থাৎ, স্যাটোর তার অ্যালগরিদমের সব পার্ট স্টাল্সক-১২-এর একটা জায়গায় পুঁতে বিষ্ফোরণ ঘটাবে, যাতে মানুষ খুঁজে না পায় ঐ অ্যালগরিদম। সঙ্গে লোকেশন পাঠিয়ে দেবে ভবিষ্যতের মানুষদের নিকট। একই সময় সব শেষ।
.
টেনেটের ক্লাইম্যাক্স। প্রোটাগনিস্ট প্রথমেই গুলিবিদ্ধ কেটকে পাঠালো ভিয়েতনাম ইয়টে। যে ইয়ট'টা এখন খালি। কারণ, অতীতের কেট তখন ঝগড়া করে পুত্র ম্যাক্সকে নিয়ে চলে গেছে ইয়ট ছেড়ে। ইয়টে ফেরত আসতে তার দেরী আছে। আর অতীতের স্যাটোর ইয়টে ঝগড়া শেষে অপেরা হাউসে চলে গেছে আক্রমণের জন্য। ভবিষ্যতের স্যাটোর খালি ইয়টের এই সময়টাই বেছে নিয়েছে, যখন কেউ থাকবে না ইয়টে, এবং সে নিজেকে গুলি করে মেরে ফেলবে ওখানে। গুলিবিদ্ধ কেটের দায়িত্ব হলো, ইয়টে যাওয়া, গিয়ে ভবিষ্যতের যে স্যাটোর নিজেকে গুলি করতে আসবে ইয়টে, তাকে কথায় কথায় ভুলিয়ে রাখা ততক্ষণ, যতক্ষন না আইভস, প্রোটাগনিস্ট ও নীল'রা মিলে স্টাল্সক-১২ থেকে অ্যালগরিদমটা উদ্ধার করে নিয়ে আসতে পারে বিষ্ফোরণের আগে।

অতএব, গুলিবিদ্ধ কেট চলে গেল ইয়টে। ভবিষ্যতের স্যাটোর উপস্থিত হলো। এখন লক্ষ্য করুন, দুইজনই ভবিষ্যত থেকে আসা আগন্তুক। কিন্তু স্যাটোর জানে না, এই কেট ভবিষ্যতের কেট। কেট জানে, এই স্যাটোর ভবিষ্যতের স্যাটোর। কেট ভান করে, সে অতীতের কেট। অথচ ঐ একই সময় সত্যিকারের অতীতের কেট বোটে করে ঘুরছে ইয়টের বাইরে। স্যাটোর সন্দেহ করে না। এই সময়টায় আইভসরা অ্যালগরিদম উদ্ধার করার জন্য একটা দশ মিনিটের টেম্পোরাল পিন্সার মুভমেন্ট করে।
দুই দলে ভাগ করে নিজেদের। লাল দলে থাকে আইভস ও প্রোটাগনিস্ট। নীল দলে থাকে নীল। প্রথমে নীল দল গিয়ে স্যাটোরের লোকদের গুলি করে, বিল্ডিং ধসে দিয়ে মোটামুটি পথ ক্লিয়ার করে ফেরত আসে। এসে লাল দলকে বিস্তারিত জানায় কখন কী ঘটেছে। লাল দল ঐ হিসাব মতে এগিয়ে যায়। একটা ঘটে যাওয়া ঘটনা, আরেকটা ঘটতে যাচ্ছে, যাই হোক, যদি সব এইরকম পরিকল্পনা মাফিক চলতো, তবে কথাই ছিল না। সমস্যা হয় নীলকে নিয়ে। যেহেতু নীল নীল দলে, সে প্রথমে গিয়েছে, সে ঘটনাগুলো রিভার্স দেখতে পাচ্ছে, এবং আগাম টের পাচ্ছে লাল দলের প্রোটাগনিস্ট ও আইভস একটা ফাঁদে আটকা পড়তে যাচ্ছে। একটা টানেলে স্যাটোরের লোক বোমা পুঁতে রাখছে। এই ফাঁদ দেখেই নীল তখনই ঐ স্থানে থাকা একটা টার্নস্টাইলে নিজেকে আবার ঠিক করে নেয় সময়ের সাথে। খেয়াল করুন, এই মিশনে নীল অর্ধেক রিভার্স ছিল, এখন আবার ঠিক, অর্থাৎ লাল দলের সময়েই চলছে। নীল নিজেকে সময়ে ঠিক রেখে সতর্ক করার চেষ্টা করে আইভস ও প্রোটাগনিস্টকে। যাতে টানেলে না ঢুকে ওরা। কিন্তু ব্যর্থ হয়। টানেল বন্ধ হয়ে যায়।

যে জায়গায় অ্যালগরিদম রেখে বিষ্ফোরণ ঘটানোর প্ল্যান ছিল, ঐ জায়গার উপরে খাড়া একটা গর্ত বিদ্যমান। নীল যখন টানেল দিয়ে ঢুকতে পারবে না বুঝতে পারে, তখন সে গাড়ি নিয়ে উপরে চলে যায়। একটা দড়ি ফেলে দেয় গর্ত দিয়ে উপর থেকে। আর অন্যদিকে টানেলের ভেতরে ঢুকে আইভস ও প্রোটাগনিস্ট দেখে, মেইন দরজা লকড। দরজার ওপাশে একজন লোক মরে পড়ে আছে। তার পিঠে লাল সুতোয় বাঁধা একটা আংটাওয়ালা ব্যাগ। প্রোটাগনিস্ট চিনতে পারে। এই ব্যাগওয়ালা ব্যক্তিই অপেরা হাউসে একবার তাকে বাঁচিয়েছিল। এই ব্যক্তি কে? পরে উত্তর পাওয়া যাবে। এখন, দরজার ওপাশে স্যাটোরের লোক। টাইম বোমা চালু করছে লোকটা। বিষ্ফোরণের আগে লক খোলা দরকার। প্রোটাগনিস্টের সঙ্গে এখানে ইয়টে বসে থাকা ভবিষ্যতের স্যাটোরের ফোনে কথা হয়। স্যাটোর নিজের লোককে আদেশ দেয় প্রোটাগনিস্টকে গুলি করতে। যখন লোকটা গুলি করতে যায়, লাল সুতোওয়ালা মৃত ব্যক্তি নিজ থেকে জীবিত হয়ে সামনে দাঁড়িয়ে গুলিটা নিয়ে নেয় নিজের শরীরে। দরজার লকটাও খুলে দেয়। এই ব্যক্তি কিন্তু রিভার্স। প্রোটাগনিস্ট ও আইভস ভেতরে ঢুকে যায়। স্যাটোরের লোকটাকে মেরে ফেলে। অ্যালগরিদম উদ্ধার করে। উপর থেকে নীলের ফেলে দেওয়া দড়ি বেয়ে উপরে উঠে যায়। এবং তারপর বিষ্ফোরণ হয়। কিন্তু তখন অ্যালগরিদম প্রোটাগনিস্টের হাতে। ঠিক একইসময় ভিয়েতনাম ইয়টে গুলিবিদ্ধ কেট, ভবিষ্যতের স্যাটোরকে গুলি করে মেরে ফেলে। এবং উপর থেকে লাফ দেয়। লাফ দেওয়ার আগে দেখতে পায়, তার নিজের অতীতের কেটকে, ম্যাক্সের সঙ্গে বোটে করে ইয়টে ফিরছে। অর্থাৎ, অতীতে যে কেট এক তরুণীকে লাফ দিতে দেখেছিল ইয়ট থেকে, ওটা সে নিজেই ছিল।

এখন শেষদিক। একটা শূন্য প্রান্তর। সামনে জগতের এক আশ্চর্য আবিষ্কার। উপস্থিত তিনজন ব্যক্তি। আইভস অ্যালগরিদমটা তিন পার্টে ভাগ করে। নিজে এক পার্ট রাখে। এক পার্ট নীল ও আরেকপার্ট প্রোটাগনিস্টকে দেয়। বলে, ওরা তিনজন টার্নস্টাইল ব্যবহার করে অতীতের সুরক্ষিত কোনো জায়গায় এইগুলো লুকিয়ে রেখে সুইসাইড করবে। যাতে পৃথিবীর কোনো মানুষ তা আর খুঁজে না পায়। তিনজন বিদায় নেয় একে অপরের থেকে। এই সময় নীল নিজের পার্টটা প্রোটাগনিস্টকে দিয়ে দেয়। নীল পেছন ফিরে যাওয়ার সময় প্রোটাগনিস্ট দেখতে পায়, নীলের ব্যাগেই ঐ লাল সুতোয় বাঁধা আংটা ঝুলছে। অর্থাৎ অপেরা হাউসে তাকে বাঁচানো ব্যক্তিটা নীলই ছিল। এবং একটু আগে দরজার ওপাশে মরে পড়ে থাকা রিভার্স ব্যক্তিটিও ছিল নীল। প্রোটাগনিস্ট সব বুঝতে পারে। নীল এখন আবার টার্নস্টাইল ব্যবহার করবে, গিয়ে টানেলে ঢুকবে, ঐ গুলিটা খেয়ে মরে যাবে। প্রোটাগনিস্ট অশ্রুসজল চোখে পুরো ঘটনাটা অন্যভাবে ঘটানোর কথা বলে। কিন্তু নীল নিষেধ করে। যা ঘটার, তা ঘটবেই।
যাওয়ার আগে নীল দু'টো তথ্য দেয়।
এক. তাদের এই বন্ধুত্ব নীলের জন্য এখানেই শেষ। কারণ একটু পর তার মৃত্যু হবে। কিন্তু প্রোটাগনিস্টের জন্য এই বন্ধুত্ব মাত্র শুরু। কারণ, নীলের সঙ্গে প্রোটাগনিস্টের ভবিষ্যতে দীর্ঘ সময়ের চমৎকার একটা বন্ধুত্ব হবে। এইজন্যই নীল প্রোটাগনিস্টের সবকিছু জানতো। কারণ, নীল প্রোটাগনিস্টের সঙ্গে কাটিয়েছে অনেক বৎসর। ভবিষ্যতে।
দুই. ভবিষ্যত থেকে নীলকে এই অপারেশনে পাঠাবে প্রোটাগনিস্টই নিজেই।

মিশন কমপ্লিট। বাকি রইল কেট। প্রিয়া(ইন্ডিয়ান বিজ্ঞানী) মিশন শেষে প্রোটাগনিস্টকে দেয়া কথা রাখেনি। কেটকে মারার প্রস্তুতি নিয়েছিল সে। কিন্তু মারার আগে প্রোটাগনিস্ট গিয়ে হাজির হয়ে প্রিয়াকে মেরে ফেলে। প্রশ্ন হচ্ছে, কিভাবে জানলো প্রোটাগনিস্ট, প্রিয়া কেটকে মারার প্ল্যান করেছে। নির্দিষ্ট সময়টাও বা জানলো কী করে? উত্তর হচ্ছে, স্টাল্সক-১২ জায়গায় যাওয়ার আগে, যখন গুলিবিদ্ধ কেটকে ভিয়েতনাম ইয়টে পাঠাচ্ছিল, তখন প্রোটাগনিস্ট তাকে একটা বিশেষ ফোন দিয়েছিল। বলেছিল, ভবিষ্যতে যখনই তার চোখে পড়বে সন্দেহজনক কিছু, তখনই যেন এই ফোনে লোকেশন সহ রেকর্ড করে রাখে তথ্যটা। প্রোটাগনিস্ট ঐ রেকর্ড থেকেই পেয়েছিল তথ্য। পোস্টারিটি। প্রিয়াকে মারার আগে প্রোটাগনিস্ট জানায়, এই টেনেট অর্গানাইজেশন সৃষ্টি তার নিজের হাতেই। ভবিষ্যতে সে নিজেই এই অর্গানাইজেশন তৈয়ার করে, লোকজন যুক্ত করে, যাতে স্যাটোরের হাত থেকে অ্যালগরিদম উদ্ধার করে পৃথিবীকে বাঁচানো যায়। প্রিয়াকে হত্যার পর মিশন সম্পন্ন হয়।
টেনেট শেষ।

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। রিভার্স জগতের মানুষগুলোকে অক্সিজেন বহন করতে হয় নিজের। কারণ, ওখানে জগত উল্টো। স্বাভাবিক জগতে মানুষ অক্সিজেন নেয়, কার্বন-ডাই-অক্সাইড ছাড়ে। রিভার্সে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নেয়, অক্সিজেন ছাড়ে। জগত রিভার্স। আপনি নন। তাই আপনাকে নিজের অক্সিজেন রাখতে হবে। এজন্যই এই সিনেমার প্রতিটি মানুষ রিভার্স জগতে পা রাখলেই মাস্ক পরে নেয়।
একটা প্রশ্ন  ছিল আমার যার উত্তর পাইনি। ভবিষ্যতের যে বিজ্ঞানী অ্যালগরিদম আবিষ্কার করেছিল, তাকে সেটা লুকানোর জন্য অতীতে যাওয়ার প্রয়োজন হয়েছিল। টার্নস্টাইলে নিজেকে রিভার্স করে নিলে জগত উল্টোদিকে যাবে, কিন্তু তার বয়স বাড়বে স্বাভাবিক মতোন। তার বয়স পঞ্চাশ হলে, দশ বছর যদি সে উল্টোদিকে চলে যায়, তার বয়স কমে চল্লিশ হবে না, তার বয়স হবে ষাট। এই বিজ্ঞানী ঠিক কয় বংশধর পর্যন্ত উল্টোদিকে গিয়েছিলেন? কারণ, মানুষের গড় আয়ু তো ষাট বৎসর।

টেনেট একটা আপাদমস্তক সৌন্দর্য। চমৎকার কিছু রেফারেন্স ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন, স্যাটোর স্কয়ার। ল্যাটিন প্যালিন্ড্রোম। বহু পুরাতন ও বহুল জনপ্রিয় এই স্কয়ারকে রোটাস স্কয়ারও বলা হয়।
SATOR
AREPO
Fundamental
Show
ROTAS
এই পাঁচটা শব্দকে বর্গাকার সাজিয়ে সোজা, উপর নিচ, ডান বাম, উল্টো সিধা যেকোনো দিক দিয়ে পড়লেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে একই শব্দগুলোই পাওয়া যাবে। টেনেট সিনেমায় এই স্কয়ারের প্রতিটা শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।
টেনেট সিনেমায় রবার্ট প্যাটিনসন অভিনয় করেছেন নীল চরিত্রে। অনেকের মতোন আমারও মনে হয়, কেটের ছোট্ট বাচ্চাটাই বড়ো হয়ে নীল হয়। কয়েকটা শক্তিশালী যুক্তিও আছে ধারণার পেছনে। কেটের বাচ্চাটার নাম ম্যাক্স। এই নামটা Maximilien এর সংক্ষিপ্ত রুপ। নামটা উল্টোদিক থেকে শেষ চার লেটার পড়লে পাওয়া যায় নীলের নাম। তাছাড়া ম্যাক্স ও নীল দুইজনেরই চুলের রঙ, স্টাইল একই। কেট যখন গুলিবিদ্ধ হয়, নীলের কেয়ারিং ভাবটা চোখে পড়ে খুব।
নীলের ব্যাগে যে লাল সুতো দেখা যায়, ওটারও অর্থ আছে। জাপানে প্রচলিত আছে, লাল সুতো সৃষ্টিকর্তার তৈরী একটা বন্ধন। যেটা একে অপরকে জুড়ে থাকতে সাহায্য করে। এই বন্ধনটা ভালোবাসার, যত্ন করার, প্রটেক্ট করার। পুরো সিনেমায় নীল সম্ভবত সাতবার মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছিল প্রোটাগনিস্টকে। যা নীলের ব্যাগেই লাল সুতো মানায়।
.
টেনেট সিনেমা পুরোটাই মূলত একশো পঞ্চাশ মিনিটের একটা টেম্পোরাল পিন্সার মুভমেন্ট। চৌদ্দ তারিখে শুরু। কিছুটা সামনে গিয়ে ফেরত এসে চৌদ্দ তারিখেই শেষ। ক্রিস্টোফার নোলান প্রচণ্ড মেধাবী একজন নির্মাতা। কল্পনাতীত ক্রিয়েটিভ মগজের অধিকারী। এখন নয়, এই সিনেমার কনসেপ্ট তিনি ভেবেছেন আরও দশ বৎসর আগে।এক কথায় দুর্ধর্ষ। এখন হজম করা যাচ্ছে না।কিন্তু আমার কেন জানি মনে হয়, ভবিষ্যতের মানুষ এই সিনেমাকে কামড়ে ধরবে নির্ঘাত। ক্রিটিক্সরা সম্ভবত অতিরিক্ত জটিলতার কারণে এভারেজ রেটিং দিয়ে রেখেছেন। আমি সেরকম লেভেলের জ্ঞানী ক্রিটিক্স নই। কিন্তু আমার মনে হয়, ওসলো এয়ারপোর্টের রিভার্স অ্যাকশন দৃশ্য, প্লুটোনিয়াম নিয়ে রাস্তায় রিভার্স গাড়ির রেইস এবং স্টাল্সক-১২-এর টেম্পোরাল পিন্সার মুভমেন্ট, এই তিনটা ক্রিয়েটিভ দুর্ধর্ষ অ্যাকশন দৃশ্যের জন্য ক্রিস্টোফার নোলান দাঁড়িয়ে অন্ততপক্ষে আধাঘন্টা জোরদার হাততালি ডিজার্ভ করেন।
আর ইমোশন?
লাল সুতোয় বাঁধা ব্যাগ কাঁধে নিয়ে এক যুবক নিজের মৃত্যুর দিকে হেঁটে যাচ্ছে, ঘাড় ঘুরিয়ে প্রোটাগনিস্টকে বলছে, এটা তোমার জন্য মাত্র শুরু বন্ধু। আমাদের দারুণ একটা সময় কাটবে ভবিষ্যতে। টেনেট একটা শুষ্ক সিনেমা হয়ে উঠত। এই দৃশ্যটা না থাকলে। এই দৃশ্যটা পুরো টেনেটের আগাগোড়াই ভিজিয়ে দেয়। এমন ভয়ংকর নিদারুণ ইমোশনাল দৃশ্য ক্রিস্টোফার নোলানই বানান। তার সিনেমায় সঙ্গীর হাত ধরে সঙ্গী মাথা পেতে দেয় রেললাইনে, বুকশেলফের ওপাশ থেকে নিজেকে আটকে রাখার চেষ্টা করে যায় অসহায় বাবা, নিজের সবচেয়ে গোপন সিক্রেট লুকিয়ে আবরা কা ডাবরা বলে হাসিমুখে ফাঁসির দড়িতে ঝুলে পড়ে ম্যাজিশিয়ান, সঙ্গীর মৃত্যুর স্মৃতি ভুলতে নিজেই নিজেকে ভুলিয়ে বসে থাকে যুবক। এটা ক্রিস্টোফার নোলানের জগত। এখানে সব ঘোলাটে। এখানে সব উল্টো। এখানে সব আবছা। এখানে সব সম্ভব।  Don't try to understand it feel it.

বর্তমানে Tenet মুভিটি বিভিন্ন মুভি ডাউনলোড ওয়েবসাইট রকমারি ভাষায় পাচ্ছেন। এখোনো যদি না দেখে থাকেন তবে আজই ডাউনলোড করে দেখে নিতে পারেন একটি মাস্টারপিছ মুভি। পোস্টটি অতিরিক্ত বড় হওয়ার জন্য আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত । তবে একথাও ঠিক যে, সম্পূর্ণ
 ব্যাখ্যা দিতে  একটু বেশী বড় পোস্ট হয়ে যায়। ধন্যবাদ ধর্য্য সহকারে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য।

Post a Comment

أحدث أقدم